দাড়ি না কাটায় ভারতে মুসলিম সেনা বরখাস্ত!

কর্তৃপক্ষের নির্দেশ সত্ত্বেও দাড়ি কাটতে রাজি হননি ভারতীয় সেনাবাহিনীর সদস্য মাকতুম হোসেন। শুধুমাত্র এই অপরাধে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হল তাঁকে। ভারতীয় সেনাবাহিনীর তরফে তাঁকে ‘অনাকাঙ্খিত সৈনিক’ বলেও আখ্যা দেওয়া দেওয়া হয়েছে। ভারতীয় সেনা সূত্রে খবর, প্রায় ১০ বছর ধরে ভারতীয় সেনাবাহিনীর আমি মেডিক্যল কোর’- এ কাজ করছেন মাকতুম হুসেন (৩৪)। চাকরিতে যোগ দেওয়ার সময় ধর্মীয় কারণেই নিজের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার (কমান্ডিং অফিসার বা সিও) কাছে অনুমতি নিয়ে নিজের দাড়ি রাখেন মাকতুম। সিও’এর তরফে বলা হয়, দাড়ি রাখা অবস্থায় ছবি তুলে নতুন পরিচয় পত্র (আইডি কার্ড) করে রাখতে এবং চাকরির জীবনের বাকী দিনগুলিতেও ওই দাড়ি রেখে দিতে হবে। কিন্তু পরবর্তী সময়ে সেনাবাহিনীর দাড়ি রাখা সম্পর্কিত যে আইন তা সংশোধন করা হয়, সেখানে বলা হয় ধর্মীয় রীতি মেনে একমাত্র শিখ সম্প্রদায়ের মানুষ ছাড়া আর কোন ধর্মের মানুষকে দাড়ি রাখার অনুমতি দেওয়া হবে না। এরপর আইন মোতাবেক সেনাবাহিনীর ওই কর্মকর্তা নিজের অনুমতি প্রত্যাহার করেন এবং মাকতুমহুসেনকে দাড়ি কেটে ফেলার নির্দেশ দেন। কিন্তু সিও’এর এই নির্দেশ না মেনে তাঁর বিরুদ্ধে বৈষম্যমূলক আচররণের অভিযোগ এনে ন্যায় বিচারের আশায় কর্নাটক হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন মাকতুমহুসেন। এরই মধ্যে পুনের সেনা কমান্ড হাসপাতালে স্থানান্তরিত হয়ে যান এই মুসলিম সেনা সদস্য। সেখানেও তাঁর নতুন সিও মাকতুমহুসেনকে দাড়ি কেটে ফেলার নির্দেশ দেন। এবারও সেই নির্দেশ প্রত্যাখ্যান করেন তিনি। ঊধ্বর্তন কর্মকর্তার নির্দেশ অমান্য করায় তাঁকে জবাবদিহির (শো-কজ) নোটিশ পাঠানো হয়। কিন্তু তাঁর কাছ থেকে সন্তোষজনক উত্তর না পাওয়ায় অবাধ্যতার অভিযোগে মাকতুমহুসেনকে ১৪ দিনের জন্য ডিটেনশন’এ পাঠানো হয়। পাশাপাশি তাঁর বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্ত প্রক্রিয়া শুরু হয়। সম্প্রতি তদন্তের সেই রিপোর্ট সশস্ত্র বাহিনীর ট্রাইবুনালের কোচি বেঞ্চে জমা পড়ে। অবশেষে চাকরি থেকেই বরখাস্ত করা হয় মাকতুমহুসেনকে। পাশাপাশি ভারতীয় সংবিধানের ২৫ নম্বর ধারা অনুযায়ী দাড়ি রাখার অধিকারের বিষয়েও মাকতুমহুসের তরফে আদালতের কাছে যে আর্জি জানানো হয়েছিল তাও খারিজ করে দেওয়া হয়েছে। আদালতের তরফে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, ”দাড়ি রাখাটা ইসলামের মৌলিক নীতি বা মতবাদের মধ্যে পড়ে না।” তবে, মাকতুমহুসেনের আইনজীবী জানিয়েছেন, তারা এই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে তারা সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হবেন।
Read More News

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *