আজ সোমবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত নিয়মিত বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম বিচারপতি অপসারণের বিস্তারিত প্রক্রিয়া সম্পর্কে কথা বলেন। সংসদে সুপ্রিম কোর্টের আপিল ও হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতিদের অপসারণ সংক্রান্ত আইনের খসড়ায় নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা।
সচিব বলেন, ১৯৭২ সালের মূল সংবিধানে বিচারপতিদের অপসারণ করার ক্ষমতা সংসদের হাতেই ছিল। ১৯৭৫ সালের পর সংবিধানের সংশোধনীর মাধ্যমে সংসদের হাত থেকে ক্ষমতা নিয়ে সুপ্রিম জুডিসিয়াল কাউন্সিল পদ্ধতি চালু করা হয়। পরে ২০১৪ সালের সেপ্টেম্বর মাসে ষোড়শ সংশোধনীতে সুপ্রিম জুডিসিয়াল কাউন্সিলের সেই বিধান রোহিত করা হয়। একইসঙ্গে সংবিধানের ৯৬ অনুচ্ছেদে আপিল বিভাগ ও হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতিদের অপসারণ করার বিধান চালু করা হয়।
Read More News
শফিউল আলম জানান, একজন বিচারপতির বিরুদ্ধে যিনি অভিযোগে করবেন, তাঁকে এফিডেভিটের মাধ্যমে পূর্ণ পরিচয় প্রকাশ করে সংসদ সচিবালয়ে লিখিত অভিযোগ জমা দিতে হবে। জাতীয় সংসদের স্পিকার এ অভিযোগ প্রয়োজন মনে করলে এটা আমলে নেবেন। এরপর তিনি বিষয়টি তদন্তের জন্য ১০ সংসদ সদস্যকে নিয়ে একটি কমিটি করে দেবেন। এ কমিটি সাতদিনের মধ্যে স্পিকারের কাছে তাদের লিখিত প্রতিবেদন দাখিল করবে। অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেলে স্পিকার সব সংসদ সদস্যকে নিয়ে গোপন বৈঠক ডাকবেন। এতে সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্য অর্থাৎ দুই-তৃতীয়াংশ সংসদ সদস্য যদি মনে করেন এ অভিযোগের তদন্ত হওয়া প্রয়োজন, তাহলে সংসদ একটি তিন সদস্যের কমিটি করে দেবে। এ কমিটির প্রধান হবেন একজন সাবেক প্রধান বিচারপতি, অন্য দুই সদস্য হবেন একজন সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল ও একজন স্বনামধন্য আইনজ্ঞ। এ কমিটি তদন্ত করে সাতদিনের মধ্যে রিপোর্ট পেশ করবে সংসদের কাছে। এর আগে কমিটির সদস্যরা অভিযোগ ওঠা সংশ্লিষ্ট বিচারপতির সঙ্গে কথা বলবেন এবং তাঁকে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দেবেন। সাবেক প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে এ কমিটি যদি মনে করে ওই বিচারপতিকে অভিযুক্ত করবে অথবা অব্যাহতি দেবে। এরপর এই কমিটি তদন্ত প্রতিবেদনের ওপর ভিত্তি করে সংসদ ওই বিচারপতির বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানান, বিচারপতির বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত না হলে অভিযোগকারীর দুই বছরের কারাদণ্ড ও পাঁচ লাখ টাকা জরিমানার বিধান রাখা হয়েছে আইনের খসড়ায়।