বেসরকারি প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের অন্তর্কোন্দলের জেরে ছাত্রলীগ নেতা নাসিম আহমেদ সোহেল (২৪) নিহতের ঘটনায় এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে অভ্যন্তরীণ আইনশৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে ১৬ জনকে স্থায়ী বহিষ্কার করা হয়েছে। এছাড়া সাতজনকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। গত ২৯ মার্চ বিশ্ববিদ্যালয়টির দামপাড়া ক্যাম্পাসে ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদে সংঘটিত হত্যাকাণ্ডের পরিপ্রেক্ষিতে গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন কর্তৃপক্ষের অনুমোদনক্রমে এ শাস্তি কার্যকর করা হয়। আজীবন বহিষ্কার হয়েছেন- বিবিএর আশরাফুল ইসলাম, ওয়াহিদুজ্জামান নিশান, মো. জিয়াউল হায়দার চৌধুরী, এসএম গোলাম মোস্তফা, তামিম উল আলম, মো. ইব্রাহীম (সোহান), এমবিএর কাজী মো. জয়নাল আবেদীন, সাইফ উদ্দিন, মো. আবু জাহেদ (উজ্জ্বল), মো. নিজাম উদ্দিন (আবিদ)। এছাড়াও এলএলবি অনার্সের সাইকুল মোহাম্মদ তারেক, এমবিএর নুরুল ফয়সাল (স্যাম), এলএলবি অনার্সের মো. সাইফুল ইসলাম সাকিব, এলএলএমের আবু ফয়েজ, বিবিএর মো. রাশেদুল হক (ইরফান) ও মো. নাজমুল হক বহিষ্কার হয়েছেন। তারা সবাই হত্যা মামলার এজাহারভুক্ত আসামি। বিশ্ববিদ্যালয়টির রেজিস্ট্রার আবু তাহের জানিয়েছেন, হত্যা মামলার এজাহারভুক্ত সব আসামিকে প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। সেই সাথে তাদের এ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রদত্ত সব ডিগ্রিও বাতিল করা হয়েছে এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত প্রোগ্রামগুলো থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। তবে, এজাহারভুক্ত আসামিদের মধ্যে কেউ অভিযোগ থেকে খালাস পেলে বা চার্জশিট থেকে বাদ গেলে তার আবেদনের ভিত্তিতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ প্রয়োগকৃত শাস্তি পুনর্বিবেচনা করতে পারবেন। সাবেক ছাত্র সাইকুল মোহাম্মদ তারেক এবং মো. নাজমুল হক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রাপ্ত এলএলবি (অনার্স) এবং বিবিএ ডিগ্রি বাতিলের ব্যাপারে আদালতের রায়ের পর কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত নেবে। শাস্তিপ্রাপ্ত ছাত্ররা পরবর্তীতে অত্র বিশ্ববিদ্যালয়ে অন্যকোনো প্রোগ্রামে অধ্যয়নের জন্য ভর্তি হতে পারবে না। মামলা চলাকালীন এই সব ছাত্রের এনরোলমেন্ট, ক্লাস, পরীক্ষা, সার্টিফিকেট এবং ট্রান্সক্রিপ্টের উত্তোলন প্রক্রিয়া বন্ধ থাকবে। গত ১০ ফেব্রুয়ারি, ১১ ফেব্রুয়ারি মারামারির উদ্দেশ্যে ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদে হকিস্টিক এবং লাঠিসোঁটা মজুদ করা এবং ২৯ মার্চ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় উপস্থিতির কারণে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাময়িক বহিস্কার করা হয় সাতজনকে। তারা হলেন বিবিএর মোজাহিদুল ইসলাম, মোহাম্মদ মাসুক কালাম, কায়সারুল আলম, মনির আহমেদ, কাজী মোহাম্মদ লিয়াকত, মোহাম্মদ নিজামুল গালিব ইমন ও কাজী মো. আশরাফ সায়েদ। এসব ছাত্রদের কেন আজীবন বহিষ্কার করা হবে না এই মর্মে আগামী ১০ এপ্রিলের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর বরাবর লিখিতভাবে কারণ দর্শাতে হবে। কারণ দর্শাতে ব্যর্থ ছাত্রদের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয় কঠোরতম শাস্তি নিশ্চিত করবে। গত ২৯ মার্চ আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে ছাত্রলীগের দু’গ্রুপের সংঘর্ষে সোহেল আহমেদ নিহত হন। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ২১তম ব্যাচের শিক্ষার্থী এবং মহানগর ছাত্রলীগের সদস্য। তিনি কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলার দয়াপুর গ্রামের আবু তাহেরের ছেলে। এ ঘটনার পরপরই বিশ্ববিদ্যালয় অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়। এরপর গতকাল সোমবার বিশ্ববিদ্যালয় খুলে ক্লাশ চালু হয়।
Read More News