মিশরীয় বিমান ছিনতাই নাটকের অবসান, সব যাত্রী মুক্ত

ছয় ঘণ্টা পর মিসরীয় বিমান ছিনতাই নাটকের অবসান হয়েছে। বোমার ভয় দেখিয়ে ৫৬ যাত্রীসহ ইজিপ্ট এয়ারের একটি বিমান ছিনতাই করে এক ব্যক্তি আজ মঙ্গলবার সাইপ্রাস নিয়ে যায়। পরে বিমানটি ছিনতাইকারীর নির্দেশে সাইপ্রাসের লারনাকা বিমানবন্দরে অবতরণ করে। প্রথমে পাঁচ বিদেশী ও এক ক্রু ছাড়া সবাইকে মুক্তি দেয়া হয়। পরে সেই ছয়জনকেও মুক্তি দেয়ার পর এক পর্যায়ে আত্মসমর্পণ করেন সেই ছিনতাইকারী। বিবিসি, রয়টার্স ও এএফপি। সাইপ্রাসের টেলিভিশনে প্রচারিত ভিডিওতে দেখা যায়, দুই হাত উপরে তুলে উড়োজাহাজ থেকে বেরিয়ে আসছেন এক ব্যক্তি। অনুমান করা হয় তিনিই ছিনতাইকারী। এর পরপরই সাইপ্রাসের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এক টুইটে বলেন, ‘ছিনতাই সঙ্কটের অবসান ঘটেছে।’
Read More News

মঙ্গলবার স্থানীয় সময় সকাল ৮টায় আলেকজান্দ্রিয়া থেকে রওনা হয়ে কায়রো যাওয়ার পথে ছিনতাই হয় ইজিপ্টএয়ারের অভ্যন্তরীণ রুটের এয়ারবাস এ৩২০ মডেলের উড়োজাহাজটি। ইজিপ্ট এয়ার জানায়, এয়ারবাস এ৩২০ ফ্লাইটে ৫৬ যাত্রী, ছয় ক্রু ও এক নিরাপত্তা কর্মকর্তা ছিলেন। এর আগে বলা হয়েছিল, বিমানটিতে ৮১ যাত্রী ছিলেন। আলেকজান্দ্রিয়া বিমানবন্দরের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, বিমানটি যখন আকাশে উড়ে তখন যাত্রীদের মধ্যে আট আমেরিকান, চার ব্রিটিশ, চার ডাচ, দুই বেলজিয়ান, এক ইতালীয় ও ৩০ মিসরীয় নাগরিক ছিলেন। ছিনতাইকারী উড়োজাহাজটিকে সাইপ্রাসে নিয়ে দক্ষিণাঞ্চলীয় বন্দর শহর লারনাকার বিমানবন্দরে নামতে বাধ্য করে। ওই বিমানের পাইলট ওমর আল-জামালের বরাত দিয়ে মিসরের সিভিল এভিয়েশন কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, যাত্রীদের মধ্যে থেকেই একজন উঠে এসে বিস্ফোরক বেল্ট দেখিয়ে হুমকি দেয় এবং লারনাকায় নামতে বাধ্য করে। অবশ্য সেই ছিনতাইকারীর বেল্টে সত্যিই বিস্ফোরক ছিল কি না- তা নিশ্চিত করতে পারেননি সাইপ্রাসের কর্মকর্তারা।

সিভিল এভিয়েশন কর্তৃপক্ষের সাথে প্রাথমিক আলোচনার পর পাইলট, কো পাইলট, তিন কেবিন ক্রু ও তিন বিদেশি যাত্রীকে রেখে ছিনতাইকারী বাকিদের তিন দফায় ছেড়ে দেয় বলে ইজিপ্টএয়ার কর্তৃপক্ষ জানায়। এরপর স্থানীয় টেলিভিশনে প্রচারিত ভিডিওতে ওই উড়োজাহাজ থেকে যাত্রীদের নেমে একটি বাসে উঠতে দেখা যায়। ছিনতাইকাণ্ডের উত্তেজনার মধ্যে লারনাকা বিমানবন্দরে বিমান ওঠানামা বন্ধ থাকে। সাইপ্রাসমুখী সব বিমানকে অন্য দিকে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। ছিনতাইকারী আত্মসমর্পণ করার প্রায় দুই ঘণ্টা আগে সাইপ্রাসের প্রেসিডেন্ট নিকোস আনাস্তাসিয়াদেস সাংবাদিকদের বলেন, এটা সন্ত্রাসবাদ জাতীয় কোনো ঘটনা নয়। সবাইকে নিরাপদে মুক্ত করার সর্বোচ্চ চেষ্টা করা হচ্ছে। এর আগে সাইপ্রাস পুলিশ জানিয়েছিল, ছিনতাইকারীরা স্থানীয় সময় সকাল সাড়ে আটটায় নিয়ন্ত্রণ টাওয়ারের সাথে যোগাযোগ করে এবং আটটা ৫০ মিনিটে বিমানটিকে অবতরণের অনুমতি দেয়া হয়। তিনি আরো জানান, ছিনতাইকারী তাৎক্ষণিকভাবে কোন দাবি জানায়নি এবং একটি ক্রাইসিস টিম বিমানবন্দরে মোতায়েন করা হয়েছে। তবে স্থানীয় গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছিল, ছিনতাইকারী একজন মিসরীয় নাগরিক। তিনি সাবেক স্ত্রীর সাথে কথা বলতে চেয়েছেন, যিনি সাইপ্রাসে থাকেন। তেমনি সাইপ্রাসের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, মিসরের একটি বিমান ছিনতাই করে সাইপ্রাসে নিয়ে আসা লোকটি ‘মানসিক ভারসাম্যহীন’। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের স্থায়ী সচিব আলেকজান্দ্রস জেনন বলেন, ‘এটি সন্ত্রাসবাদের বিষয় নয়। এটি এক মানসিক ভারসাম্যহীন ব্যক্তির ব্যক্তিগত কাণ্ড।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *