যুক্তরাজ্যে “করোনার নতুন ধরনটি” সংক্রমণ নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা বাড়ছে। বিশ্বের ৪০টিরও বেশি দেশ এরই মধ্যে সেসব দেশে যুক্তরাজ্য থেকে ভ্রমণে সাময়িক নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন এ বিষয়ে সম্মিলিত নীতিমালা নির্ধারণে বৈঠক করেছে।
ভাইরাস প্রতিনিয়ত নিজে থেকে পরিবর্তন হওয়ার মধ্য দিয়ে নতুন রূপ ধারণ করতে থাকে, যাকে বলা হয় ‘মিউটেশন’। এই মিউটেশনের মধ্য দিয়ে ভাইরাস যেমন শক্তিশালী হয়ে উঠতে পারে, তেমনি অনেক সময় এর শক্তি হ্রাসও পায়।
সম্প্রতি যুক্তরাজ্যের বেশকিছু স্থানে করোনাভাইরাসের নতুন এক ‘স্ট্রেইনের’ সন্ধান পাওয়া গেছে। এ কারণে গত শনিবার দেশটির প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন নতুন করে বিধিনিষেধ আরোপের ঘোষণা দেন।
Read More News
নতুন স্ট্রেইনটি আরো বেশি উদ্বেগের কারণ এটিতে প্রায় দুই ডজন মিউটেশন রয়েছে এবং এগুলোর মধ্যে আবার বেশ কয়েকটিতে শক্তিশালী প্রোটিন রয়েছে যা মানবকোষে সংযুক্ত ও সংক্রমিত হতে ভাইরাস ব্যবহার করে থাকে।
এ ছাড়া করোনাভাইরাসের নতুন স্ট্রেইনটি এর আগের মিউটেশনগুলোকে দ্রুত প্রতিস্থাপন করছে এবং এর মাধ্যমে ভাইরাসটির সংক্রমিত হওয়ার সক্ষমতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। তবে বড় উদ্বেগের মধ্যেও আশার বাণী দিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। তাঁদের মতে, কোভিড-১৯ সংক্রমণ রোধে যেসব ভ্যাকসিন প্রস্তুত করা হচ্ছে সেগুলো মিউটেশনের মাধ্যমে নতুন আবির্ভূত এই ভাইরাসের বিরুদ্ধেও কার্যকর হবে।
ইউরোপের দেশ ডেনমার্কে “করোনার নতুন ধরনটি” শনাক্ত হয়েছে। এ কারণে ডেনমার্ক থেকে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে সুইডেন। ডেনমার্ক ছাড়াও অস্ট্রেলিয়া, ইতালি ও নেদারল্যান্ডসে এই নতুন করোনা স্ট্রেইন শনাক্ত হয়েছে। করোনার এই নতুন ধরন অতি দ্রুত সংক্রমিত হচ্ছে। তবে এটি অন্যান্য করোনাভাইরাসের চেয়ে বেশি প্রাণঘাতী কি না, তার প্রমাণ মেলেনি।
যুক্তরাজ্যের স্বাস্থ্যমন্ত্রী ম্যাট হ্যানককের সঙ্গে সুর মিলিয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) জরুরি স্বাস্থ্য সেবা প্রধান মাইক রায়ান বলেছেন, নতুন ধরনের করোনা আসলে মহামারির নিয়মিত বিবর্তন এবং এটি নিয়ন্ত্রণের বাইরেও নয়। গত রোববার হ্যানকুক বলেছিলেন, নতুন করোনা নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গিয়েছিল, তবে বর্তমানে তা নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।
এদিকে, ইউরোপ ছাড়াও যুক্তরাজ্য থেকে যাত্রীদের আগমনে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে ভারত, ইরান, ও কানাডা। অন্যদিকে, সৌদি আরব, কুয়েত ও ওমান আন্তর্জাতিক যাত্রীদের সেসব দেশে ঢুকতে দিচ্ছে না।
যুক্তরাষ্ট্র এখনো কোনো ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা জারি করেনি। তবে দুটি বিমান সংস্থা ব্রিটিশ এয়ারওয়েজ ও ডেল্টা শুধু করোনা নেগেটিভ যাত্রীদেরই নিউইয়র্কের জন এফ কেনেডি বিমানবন্দরের উদ্দেশে যেতে ইচ্ছুকদের অনুমতি দিচ্ছে।
অন্যদিকে, দক্ষিণ আফ্রিকা থেকেও ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে কয়েকটি দেশ। সেখানে নতুন ধরনের করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। তবে সেটি যুক্তরাজ্যে শনাক্ত হওয়া ধরনটির চেয়ে ভিন্ন।
বাংলাদেশ সময় আজ মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত যুক্তরাজ্যে ২০ লাখ ৭৩ হাজার ৫১১ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছে। ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে নতুন করে ৩৩ হাজারের বেশি মানুষের করোনা শনাক্ত হয়েছে। এ পর্যন্ত এই রোগে মৃত্যু হয়েছে ৬৭ হাজার ৬১৬ জনের। বিশ্বখ্যাত পরিসংখ্যান সাইট ওয়ার্ল্ডোমিটার এসব তথ্য জানিয়েছে।
 Supreme Watches News
Supreme Watches News