পাকিস্তানের জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী আতিফ আসলাম সংগীতাঙ্গন ছেড়ে দিচ্ছেন। সম্প্রতি পাকিস্তানের খ্যাতিমান সাংবাদিক হামিদ মীরের উপস্থাপনায় ‘ক্যাপিটাল টক’ নামে অনুষ্ঠানে সংগীতাঙ্গন থেকে সরে যাওয়ার ব্যাপারে নিজের অবস্থান পরিষ্কার করেন আতিফ।
আতিফ আসলাম বলেন, অস্থায়ী দুনিয়ায় ধর্মের সঙ্গে ভালোভাবেই সম্পৃক্ত হতে চাই। ‘মিউজিক ইন্ডাস্ট্রি ছেড়ে যাওয়ার বিষয়টি একান্তই ব্যক্তিগত ব্যাপার। এই পৃথিবীর অংশ হিসেবে আমি ধর্মের সঙ্গে যুক্ত হতে চাই। আমি বলব না যে একেবারেই গান ছেড়ে দেব, কিন্তু ধর্মের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোতে আমি আলোকপাত করতে চাই, যেমন আল্লাহর ৯৯ নাম ও তাজদার-ই-হারাম।
Read More News
পাকিস্তানে লকডাউন উঠে যাওয়ার পর আতিফের দেওয়া আজান অন্তর্জালে বেশ তোলপাড় ফেলেছে। এ ব্যাপারে আতিফ জানান, পবিত্র স্থান সৌদি আরবের মক্কার পবিত্র কাবা শরিফে আজান দেওয়ার ইচ্ছে তাঁর দীর্ঘদিনের। আর সেখান থেকেই ওই ধারণা এসেছে।
আমি শুনেছি, মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর সময়কালে মানুষ ছাদে উঠে আজান দিতেন। ধারণাটি সেখান থেকে আসে এবং একমুহূর্ত চিন্তা না করে তা করি, বলেন আতিফ।
আতিফ আরো বলেন, এটি রেকর্ড করার আগে আমি রাতে ঘুমাতে পারিনি এবং আমার যেন তর সইছিল না। অনুভূতি সত্যিই ভাষায় প্রকাশ করার মতো না। কখনো ভাবিনি, এমন সুযোগ পাওয়ার মতো ভাগ্যবান হব আমি।
সম্প্রতি কোক স্টুডিওতে আসমাউল হুসনা (আল্লাহর ৯৯টি নাম) নিয়ে নিজের পারফরম্যান্স সম্পর্কেও কথা বলেন আতিফ আসলাম।
আতিফ বলেন, ‘জীবনে আমরা অনেক কাজই করি, যার কিছু পুণ্যের, কিছু পাপের। আমি বেশ ভাগ্যবান ছিলাম, কেননা তাজদার-ই-হারাম পরিবেশন করতে পেরেছি। আসমাউল হুসনা পারফর্ম করতে পারায় আমি নিজেকে বেশ ভাগ্যবান মনে করি। নামগুলো আমি যখন উচ্চারণ করছিলাম, তখনকার অনুভূতি আমি বলে বোঝাতে পারব না।’ আতিফের ওই পারফরম্যান্স বিশ্বব্যাপী ব্যাপকভাবে প্রশংসিত হয়।
আতিফ আসলাম একজন পাকিস্তানি গায়ক ও চলচ্চিত্র অভিনেতা। তিনি বলিউডের কয়েকটি ছবিতে ক্যামিও ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছেন। ২০১১ সালে পাকিস্তানি চলচ্চিত্র বোল-এ তিনি প্রথম অভিনেতা হিসেবে আবির্ভূত হন। তিনি অসংখ্য জনপ্রিয় গান গেয়েছেন। তিনি তার “ভোকাল বেল্টিং” পদ্ধতির জন্য সুপরিচিত। তিনি প্রধানত হিন্দি, উর্দু ও পাঞ্জাবি ভাষায় গান করেন, তবে তিনি বাংলাতেও গান গেয়েছেন। ২০০৮ সালে আতিফ আসলাম পাকিস্তানের চতুর্থ-সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মান তমগা-এ-ইমতিয়াজ-এ ভূষিত হন।
আতিফ আসলাম পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশের ওয়াজিরাবাদে একটি পাঞ্জাবি মুসলমান পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি লারকানার কিম্বারলে হল স্কুলে কিন্ডারগার্টেন শিক্ষা শুরু করেন। ১৯৯১ সালে তিনি রাওয়ালপিন্ডি চলে আসেন। সেখানকার স্যাটেলাইট টাউনের সেন্ট পলস কেমব্রিজ স্কুলে ভর্তি হন। ১৯৯৫ সালে তিনি লাহোরে ফিরে আসেন। সেখানে ডিভিশনাল পাবলিক স্কুলে পড়াশোনা করেন। এরপর লাহোর কলেজ পাঞ্জাব থেকে তিনি এফএসসি করেন। তারপর তিনি স্নাতক সম্পন্ন করেন।