সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কিছু ছবি বাস্তব, কিছু মনগড়া :মিথিলা

পরিচালক ইফতেখার আহমেদ ফাহমির সঙ্গে অভিনেত্রী রাফিয়াথ রশিদ মিথিলার ব্যক্তিগত একাধিক ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। এ নিয়ে তোলপাড় চলছে ফেসবুকে। অনেকে তীর্যক মন্তব্যে আঘাত করছেন মিথিলাকে।

এ বিষয়ে প্রথমে মিথিলা ও ফাহমি কেউ-ই কোনো কথা বলতে রাজি হননি। পরে মঙ্গলবার রাত ১০টায় নিজের অবস্থান পরিস্কার করে ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন মিথিলা। ইংরেজিতে লেখা সেই স্ট্যাটাসে মিথিলা ফাহমির সঙ্গে তার সম্পর্ক, ব্যাক্তিগত ছবি ফাঁস হওয়া এবং এর বিরুদ্ধে তার পদক্ষেপের কথা জানিয়েছেন। সেই সঙ্গে ব্যক্তিগত গোপনীয়তা রক্ষা করতে না পারায় দায় এড়ানোর চেষ্টা করেননি তিনি।
Read More News

ফেসবুকে পোস্টে মিথিলা লিখেছেন, ‘কী ঘটেছে তার কোনো ব্যাখ্যা দিতে আসিনি। বরং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আমার কিছু ব্যক্তিগত ছবি নিয়ে যা হয়েছে, সেই সম্পর্কে নিজের অবস্থান পরিষ্কার করতে চাই। এসব ছবির কিছু বাস্তব, কিছু মনগড়া। আমার সুনাম ক্ষুণ্ন করতে কিছু অপরাধী প্রতিহিংসাপরায়ণ হয়ে এগুলো অনলাইনে ছেড়ে দিয়েছে।’

২০১৭-১৮ সালে ইফতেখার আহমেদ ফাহমির সঙ্গে মিথিলার সম্পর্ক ছিল। তাদের মধ্যকার সম্পর্ক থাকাকালের কিছু ছবি ফাঁস হয়েছে। সম্পর্কের কথা স্বীকার করে মিথিলা লেখেন- ‘ফাহমির ফেসবুক প্রোফাইল হ্যাক হয়েছিল। তখনই অপরাধীরা খারাপ উদ্দেশ্যে ব্যবহারের জন্য এগুলো খুঁজে নিয়েছে। এখানে ডেটিং শব্দটির ওপর জোর দিতে চাই, যার অর্থ আমরা একটি সম্পর্কে ছিলাম। সহজভাবে বললে- দুটি মানুষ একে অপরের সঙ্গে জড়ালে ঘনিষ্ঠ মুহূর্ত কাটায়, ছবি তোলে। প্রযুক্তির যুগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তারা এগুলো ভাগ করে নেয়। তবে নিজের গোপনীয়তা রক্ষা করতে না পারার দায় আমারই।’

তবে এসব ছবি ফাঁস হয়ে যাওয়ায় মোটেও বিব্রত নন মিথিলা। পোস্টে তা সাফ জানিয়ে দিয়ে লিখেছেন- ‘আমার লজ্জা লাগছে এই ভেবে, দেশের কিছু কুৎসিত লোক আমার ব্যক্তিগত মুহূর্তগুলো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ইচ্ছেমতো পোস্ট, শেয়ার ও ব্যবহারের সুযোগকে কাজে লাগিয়েছে। আমার খ্যাতি ও ভাবমূর্তিকে অসম্মান করে তারা সাবস্ক্রিপশন বাড়াচ্ছে ও নানান খবর ছড়িয়ে দিচ্ছে।’

মিডিয়াকে দোষারোপ করে এই অভিনেত্রী লেখেন- ‘আমাকে কার্যত ধর্ষণ করা হচ্ছে। আমার লজ্জা হয় সেসব মিডিয়ার জন্য, বিশেষ করে কয়েকটি নিউজ পোর্টাল আমার অনুমতি ছাড়াই আমাকে উদ্ধৃত করে এই খবর প্রকাশ করেছে। অথচ আমি এ নিয়ে কখনই কথা বলিনি বা কোনো বক্তব্য দিইনি। ঘরে-বাইরে, ভার্চুয়াল জগতসহ সর্বত্র যেকোনো জায়গায় নারীদের যৌন হেনস্তা করা হলে একইভাবে লজ্জিত ও ক্ষিপ্ত হই।’

নিজের অর্জনগুলো সামনে এনে মিথিলা লেখেন- ‘আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, আমার সম্মান ও মর্যাদা শুধু আমার আকার আর পোশাকের কিংবা ব্যক্তিগত ছবির মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। জীবনে কঠোর পরিশ্রম, সৃজনশীলতা ও শিক্ষার মাধ্যমে সব অর্জন করেছি। আমার অতীতের ব্যক্তিগত মুহূর্তগুলো চুরি করে কিছু অপরাধীর কুকর্মের কারণে এসব ভেঙে যাওয়ার মতো ঠুনকো নয়।’

নিজেকে শান্ত রাখতে ও ইতিবাচক মনোভাবের ওপর জোর দিতেই গত ২৪ ঘণ্টা ফাঁস হওয়া ছবি নিয়ে মুখ খোলেননি বলে জানান মিথিলা। তার আশা ছিল, এর মাধ্যমে আরও শক্তিশালী হয়ে ফিরে আসতে পারবেন। তবে যেসব ফেসবুক গ্রুপ, পেজ ও অনলাইন পোর্টাল অনুমতি ছাড়া ফাঁস হওয়া ছবিসহ খবর প্রকাশ করেছে, তাদের বিরুদ্ধেও আইনি পদক্ষেপ নেয়ার কথা জানিয়েছেন তিনি।

সাইবার অপরাধ বিভাগে অভিযোগ জানানোর তথ্য দিয়ে মিথিলা হুশিয়ার করেছেন, ‘আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহায়তায় যারা আমার মান-সম্মান নিয়ে খেলেছে, সেই দুষ্কৃতকারীদের চিহ্নিত করে ছাড়ব। শপথ করছি, নিজের জন্য এবং হ্যাকার ও সাইবার অপরাধীদের শিকার হওয়া সবার জন্য লড়ব।’

সবশেষে দুঃসময়ে পাশে থাকার জন্য পরিবার, বন্ধু ও সহকর্মীদের ধন্যবাদ জানিয়েছেন মিথিলা। যদিও মঙ্গলবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার পর স্ট্যাটাসটি মুছে ফেলা হয়েছে।

প্রসঙ্গত সোমবার রাতে ফেসবুকের একটি গ্রুপ থেকে নির্মাতা ও পরিচালক ইফতেখার আহমেদ ফাহমির সঙ্গে মিথিলার অন্তরঙ্গ একটি ছবি পোস্ট করা হয়। এর পর রাতেই ছবিটি ভাইরাল হয়ে পড়ে। পরে আরও কয়েকটি ছবি ছড়িয়ে পড়ে।

মঙ্গলবার সকালে এ দুই শোবিজ তারকার একাধিক অন্তরঙ্গ ছবি বিভিন্ন গ্রুপে পোস্ট হতে থাকে। ছবিগুলো নিয়ে দিনভর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তুমুল আলোচনা-সমালোচনা চলতে থাকে। বিষয়টি নিয়ে বিনোদন অঙ্গনকে নাড়া দেয়। এ নিয়ে শোবিজের অনেক তারকাই তাদের মত ব্যক্ত করেছেন। অনেকে মিথিলার পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন। অনেকে প্রতিবাদ করেছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *