বরগুনার চাঞ্চল্যকর রিফাত শরীফ হত্যা মামলায় গ্রেফতার তার স্ত্রী ও মামলার প্রধান সাক্ষী আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নির জামিন আবেদন মঞ্জুর করেননি হাইকোর্ট।
আদালতে মিন্নির পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জেড আই খান পান্না ও ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন এবং রাষ্ট্রপক্ষে অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মমতাজ উদ্দিন ফকির শুনানি করেন। মিন্নির আবেদনের পক্ষে অর্ধশতাধিক আইনজীবী উপস্থিত ছিলেন। এ সময় মামলার শুনানি দেখতে অনেক আইনজীবী ও সাধারণ মানুষ উপস্থিত ছিলেন।
Read More News
মিন্নির আইনজীবী জেড আই খান পান্না আদালতে বলেন, আয়শা সিদ্দিকা মিন্নি এ মামলার প্রধান সাক্ষী। স্বামী হত্যায় তাঁকে বানানো হলো আসামি। ১৯ বছরের একজন মেয়ে মিন্নি। পুলিশ তাঁকে নির্যাতন করায় তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। নারী ও অসুস্থ বিবেচনায় জামিন চাই। ফৌজদারি কার্যবিধির ৪৯৭ ধারা অনুযায়ী নারী, শিশু ও বৃদ্ধা হলে জামিন পাওয়ার বিধান রয়েছে।
জেড আই খান পান্না আদালতে আরো বলেন, আয়শা সিদ্দিকা মিন্নি নিজের জীবনবাজি রেখেই ঘটনাস্থলে গিয়ে তাঁর স্বামীকে বাঁচানোর চেষ্টা করেছেন। তিনি যদি জড়িত হতেন তাহলে এত জীবনবাজি রেখে স্বামীকে বাঁচানোর চেষ্টা করতেন না। তিনি তো ঘটনাস্থলেই যেতেন না।
জেড আই খান পান্না বলেন, একটি বিশেষ মহলকে বাঁচানোর জন্যই পুলিশ প্রশাসন উঠে পড়ে লেগেছে। মিন্নি যদি জামিন পান তাহলে তিনি পালিয়ে যাবেন না। কিন্তু এ মামলার প্রধান সাক্ষীকে সরিয়ে দিলে মামলার মূল আসামিরা ধরাছোঁয়ার বাইরে চলে যাবে।
মিন্নির পক্ষে অপর আইনজীবী ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন শুনানিতে বলেন, দিনে-দুপুরে প্রকাশ্যে ঘটনা ঘটল। দেশবাসী সবার কাছে বিষয়টি পরিষ্কার হয়ে গেছে। অথচ কিছু লোককে রক্ষা করার জন্য মিন্নিকে আসামি করা হয়েছে। ঘটনার ১৮ দিন পর সাক্ষীকে আসামিকে করা হলো। আমরা নারী ও অসুস্থ বিবেচনায় তাঁর জামিন চাই।
এরপর আদালতে রাষ্ট্রপক্ষের অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মমতাজ উদ্দিন ফকির জামিনের বিরোধিতা করে বক্তব্য দেওয়া শুরু করেন।
মমতাজ উদ্দিন ফকির শুনানিতে বলেন, ভিডিও আছে, আনেক কিছুই আছে। আমি আপনাকে জানাচ্ছি। মিন্নির সঙ্গে নয়ন বন্ডের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। শুধু তাই নয়, রিফাতের আগে মিন্নির সঙ্গে নয়ন বন্ডের বিয়ে হয়। সেই বিয়ে গোপন করেই মিন্নি রিফাতের সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। নয়ন বন্ড যখন জেলে থাকে তখন মিন্নি তথ্য গোপন করে রিফাত শরীফকে বিয়ে করেন। সেই কাবিননামা আমাদের কাছে রয়েছে। শুধুই তাই নয়, নয়ন বন্ড জেল থেকে বের হয়ে আসার পর এক সঙ্গে দুটি সম্পর্ক বজায় রাখেন মিন্নি। স্বামীর পাশাপশি নয়ন বন্ডের সঙ্গেও শারীরিক সম্পর্ক করতেন মিন্নি। কলেজে যাওয়ার নাম করে মিন্নি নয়ন বন্ডের বাসায় গিয়ে মেলামেশা করতেন। এ বিষয়গুলো মিন্নি নিজেই স্বীকার করেছেন তদন্ত কর্মকর্তার কাছে। রিমান্ড আবেদনে এসব বিষয়ের তথ্য পাওয়া গেছে।