চিকিৎসকের ব্যক্তিগত গাড়িচালক আবদুস সাত্তার (৪০) চিকিৎসককে আনা-নেওয়ার ফাঁকে যাত্রী তুলতেন। সে সময় যানবাহনের অপেক্ষায় থাকা নারীদের টার্গেট করে গাড়ি থামাতেন। সুযোগ বুঝে নারী যাত্রীদের যৌন নিপীড়নের চেষ্টা করতেন।
Read More News
তবে নারীদের যৌন নিপীড়নের সময় উত্তপ্ত পরিস্থিতির সৃষ্টি হলে গাড়ি চালু করে দ্রুত পালিয়ে যেতেন। রাজধানীর ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রীর সঙ্গে একই ধরনের ঘটনা ঘটান সাত্তার। ঘটনার পর তরুণীর বাবা রাজধানীর খিলগাঁও থানায় একটি মামলা করেন। মামলার সূত্র ধরে তদন্তে নেমে গত ১৭ জুন সাত্তারকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তাঁর গ্রামের বাড়ি ভোলার লালমোহন উপজেলায়।
ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী গত মে মাসে অটোরিকশার জন্য অপেক্ষা করছিলেন। রাস্তায় যথেষ্ট জায়গা ছিল, কিন্তু হঠাৎ সাদা রঙের একটি প্রাইভেটকার তার গাঁ ঘেষে দাঁড়ায়। ওই ছাত্রী গাড়ির কাছ থেকে কিছুটা সরে গেলেও রেহাই পাননি। প্রাইভেটকারটি আরো চাপিয়ে দেওয়া হয় তাঁর দিকে। গাড়ির জানালার কাঁচ নামিয়ে তাঁকে ছোয়ার চেষ্টা করেন গাড়িচালক আবদুস সাত্তার। এরপর সাত্তার আরো দুদিন একই ধরনের ঘটনা ঘটিয়ে ছাত্রীর শরীরে হাত দেন।
একইভাবে গত ১৩ মে খিলগাঁও কমিউনিটি সেন্টারের সামনের এলাকায় ময়লার ভাগাড়ের পাশে অটোরিকশার অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে ছিলেন ওই ছাত্রী। সেদিনও সাদা রঙের প্রাইভেটকার নিয়ে সাত্তার তাঁর পাশে গিয়ে গাড়ি থামান। ছাত্রী পিছু হটলে তাঁকে রাস্তার পাশের ময়লার ভাগাড়ের সঙ্গে চাপিয়ে গাড়ি দাঁড় করান সাত্তার। পরে ড্রাইভিং সিটে বসে থেকে ছাত্রীর স্পর্শকাতর স্থানে হাত দেন। ওই ছাত্রী চিৎকার শুরু করলে আশপাশের লোকজন এগিয়ে আসার আগেই দ্রুত পালিয়ে যান সাত্তার। পরে গাড়িটির দিকে দৌঁড়াতে দৌঁড়াতে গাড়ির নম্বরপ্লেটের ছবি তুলে রাখেন ছাত্রী।
গত ১৬ মে ওই ছাত্রীর বাবা খিলগাঁও থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে যৌন পীড়ন করার অপরাধে একটি মামলা করেন। মামলার এজাহারে দেওয়া গাড়িটির রেজিস্ট্রেশন নম্বর হলো ঢাকা মেট্রো-গ-২৫৮২৫৫। সেই সূত্র ধরে কাজ শুরু করে খিলগাঁও থানা পুলিশ।
গত ১৭ জুন গাড়ির মালিক এক চিকিৎসক ও তাঁর চালক (আবদুস সাত্তার) কে থানায় হাজির করা হয়। পরে ওই ছাত্রীকেও থানায় ডাকা হয়। সে সময় অনেকের উপস্থিতিতে ওই ছাত্রী অপরাধী আবদুস সাত্তারকে শনাক্ত করেন। পরে আবদুস সাত্তারকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়।