আল কায়েদার উত্তর আফ্রিকা শাখার বন্দুকধারীদের গুলিতে আইভরি কোস্টের একটি অবকাশযাপন কেন্দ্রে ১৬ জন নিহত হয়েছেন। গত রোববারের এ ঘটনায় নিহতদের মধ্যে চারজন ইউরোপীয় নাগরিক ও দুইজন আইভরি সেনা রয়েছেন। এ হামলার মাধ্যমে পশ্চিম আফ্রিকা অঞ্চলে আল কায়েদার ক্রমবর্ধমান সক্রিয়তার প্রকাশ ঘটেছে বলে মনে করছেন পর্যবেক্ষকরা। দেশটির বাণিজ্যিক রাজধানী আবিদজান থেকে ৪০ কিলোমিটার পূর্বের শহর গ্রান্ড বাসসামে হামলাটি চালানো হয়। শহরটি একটি জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্র। ছয় বন্দুকধারী সমুদ্রমুখি শহরটির সৈকতের পাশ ঘেঁষে দাঁড়িয়ে থাকা হোটেলগুলোতে তা-ব চালিয়ে ১৬ জনকে হত্যা করে। পরে আইভরি কোস্টের নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে গোলাগুলিতে ছয় হামলাকারীর সবাই নিহত হন বলে জানিয়েছে দেশটির সরকার। ঘটনাস্থল পরিদর্শনকালে আইভরি কোস্টের প্রেসিডেন্ট অ্যালাসেন আউত্তারা বলেন, গতকাল সোমবার বিকালে বাসসামের সৈকতে ৬ হামলাকারীর হামলায় দুর্ভাগ্যজনকভাবে আমাদের ১৪ জন বেসামরিক ও বিশেষ বাহিনীর দুই সেনা নিহত হয়েছেন।
Read More News
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, সৈকতে যাওয়ার একটি হাঁটাপথ ধরে বন্দুকধারীরা সৈকতে হাজির হয়, সেখানে সাগরে গোসলরত ও সৈকতে সূর্যস্নানরতদের লক্ষ্য করে গুলিবর্ষণ করে। এরপর সৈকতের পাশে থাকা পর্যটকে ঠাসা হোটেলগুলোতে গিয়ে দুপুরের খাবার গ্রহণরত পর্যটকদের লক্ষ করে গুলি চালায়।
ম্যারি বাসোলি নামের এক প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, তারা গুলিবর্ষণ শুরু করার সঙ্গে সঙ্গেই সবাই দৌড়াতে শুরু করেন। নারী ও শিশুরা দৌড়ে গিয়ে লুকিয়ে পড়ে। তারা যাকেই দেখছিল, গুলি করছিল।
নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা এলাকাটি ঘিরে ফেলে। তারা লোকজনকে সরিয়ে নিয়ে বন্দুকধারীদের সঙ্গে লড়াই শুরু করে।
কালো প্যান্ট ও ডোরাকাটা রক্তাক্ত একটি শার্ট পরা এক হামলাকারীর মৃতদেহ একটি হোটেলের প্রবেশ পথের কাছে পড়েছিল। তার মাথায় বুলেটের আঘাত। তার পাশে সৈকতের বালুতে অতিরিক্ত গুলিসহ একটি যুদ্ধ-পোশাক পড়ে ছিল। কাছেই বালুতে কয়েকটি অবিস্ফোরিত গ্রেনেড পড়ে ছিল।
ফরাসি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক মুখপাত্র হামলায় এক ফরাসি নাগরিক নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন।
অন্যদের জাতীয়তা জানা না গেলেও নিহতদের মধ্যে চারজন ইউরোপীয় রয়েছেন বলে সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছেন আইভরি কোস্টের একজন কর্মকর্তা।
পরে দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হামেদ বাকায়োকো জানিয়েছেন, নিহত বিদেশিদের মধ্যে ফ্রান্স, জার্মানি, বার্কিনা ফাসো, মালি ও ক্যামেরুনের নাগরিকরা রয়েছেন।
গ্রান্ড বাসসামের চেলসিয়া হোটেলে তিন ইউরোপীয়র লাশ ও পাশের ইতোইলে দু সুদ হোটেলে অপর এক ইউরোপীয়র লাশ দেখেছেন বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিনিধি।