আজ বুধবার সচিবালয়ে মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির সরকারি চাকরিতে কোটা বাতিলের প্রস্তাব অনুমোদন করেছে মন্ত্রিসভা। তবে তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির চাকরির ক্ষেত্রে কোটা বহাল থাকবে।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম জানান, দুই-তিন দিনের মধ্যে এর প্রজ্ঞাপন জারি করা হবে।
Read More News
এর আগে গত ১৭ সেপ্টেম্বর সরকারি চাকরিতে নবম থেকে ত্রয়োদশ গ্রেড পর্যন্ত, অর্থাৎ প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির চাকরিতে কোটা পদ্ধতি বাতিলের সুপারিশ করে মন্ত্রিপরিষদ সচিব শফিউল আলমের নেতৃত্বাধীন কমিটি। সচিব কমিটি মোট তিনটি সুপারিশ করেছিল। পরে তা অনুমোদনের জন্য প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পাঠানো হয়। প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদন শেষে তা আসে মন্ত্রিসভায়। এখন এ ব্যাপারে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় প্রজ্ঞাপন জারি করবে।
শফিউল আলম বলেন, কমিটির রিপোর্ট মন্ত্রিসভায় উপস্থাপন করা হয়। তিনটি সুপারিশ ছিল। প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণিতে মেধার ভিত্তিতে নিয়োগ, কোটা বাতিল এবং কোটা বাতিলের ফলে বিদ্যমান জনগোষ্ঠীর বিষয়ে যথাপযুক্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ।
মন্ত্রিসভা তিনটি সুপারিশই অনুমোদন দিয়েছে। তবে যদি কখনো অনগ্রসর সম্প্রদায়ের জন্য কোটার প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়, তবে সরকার তা করতে পারবে।
বর্তমান সরকারি চাকরিতে বেতন কাঠামো অনুযায়ী মোট ২০টি গ্রেড রয়েছে। এর প্রথম গ্রেডে অবস্থান করেন সচিবরা। আর প্রথম বা দ্বিতীয় শ্রেণির কর্মকর্তা হিসেবে যাঁরা নিয়োগ পান, তাঁদের শুরুটা হয় নবম থেকে ত্রয়োদশতম গ্রেড থেকে। একজন গেজেটেড বা নন-গেজেটেড প্রথম শ্রেণির কর্মকর্তা নবম গ্রেডে নিয়োগ পেয়ে থাকেন।
এ ক্ষেত্রে মুক্তিযোদ্ধা, নারী, আদিবাসী, প্রতিবন্ধী, জেলা কোটাসহ নানা ধরনের কোটা রয়েছে। এর মধ্যে ৩০ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা কোটা, ১০ শতাংশ জেলা কোটা, ১০ শতাংশ নারী কোটা, ৫ শতাংশ ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী কোটা ও শর্ত সাপেক্ষে ১ শতাংশ প্রতিবন্ধী কোটা, অর্থাৎ মোট ৫৬ শতাংশ কোটা সংরক্ষণের বিধান রয়েছে।
এই কোটা পদ্ধতি সংস্কারের দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন শিক্ষার্থী ও চাকরিপ্রত্যাশীরা। তাঁদের দাবি ছিল, কোটা ১০ শতাংশে নামিয়ে আনা। কিন্তু সরকার প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির চাকরির ক্ষেত্রে ৫৬ শতাংশ কোটাই বাতিল করে দিয়েছে। তবে সচিব কমিটি তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির চাকরির জন্য কোটা বাতিলের ব্যাপারে কোনো সুপারিশ করেনি। ফলে এ ক্ষেত্রে বর্তমানে যে নিয়ম বহাল রয়েছে, তা-ই থাকবে।