পাবনার চাটমোহর উপজেলার ছোট গুয়াখড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৪র্থ শ্রেণির এক শিক্ষার্থীকে মেরে গুরুতর আহত করার অভিযোগ পাওয়া গেছে স্কুলের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে। ওই শিক্ষার্থীকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনায় রবিবার দুপুরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন শিক্ষার্থীর মা। আহত শিক্ষার্থী শাকিল মথুরাপুর ইউনিয়নের ছোট গুয়াখড়া গ্রামের সাজেদা খাতুন ও মৃত নওশের আলীর ছেলে। আহত শিক্ষার্থী শাকিলের মা সাজেদা খাতুন বলেন, রবিবার দুপুরে বিদ্যালয় মাঠে শাকিল তার সহপাঠীদের সাথে বাঁশের লাঠি আর একটি ছোট বল দিয়ে ক্রিকেট খেলছিল। খেলার এক পর্যায়ে বাঁশের লাঠি ভেঙে সাদিয়া নামের অপর এক শিক্ষার্থীর মাথায় আঘাত লাগে।
শাকিল সাদিয়াকে দ্রুত টিউবওয়েলে নিয়ে মাথায় পানি দিচ্ছিল। এ সময় ওই বিদ্যালয়েল দপ্তরি নুরুজ্জামান ভাঙা বাঁশের লাঠিটি নিয়ে টিউবওয়েলের কাছে শাকিলকে বেধড়ক পেটায়। পরে বিষয়টি জানতে পেরে ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ইশরাত জাহান লাকী এসে অপর একটি লাঠি দিয়ে শাকিলকে দ্বিতীয় দফায় মারপিট করেন। নির্যাতনের এক পর্যায়ে সংজ্ঞা হারিয়ে ফেলে শাকিল। খবর পেয়ে স্কুল পরিচালনা কমিটির সভাপতি মো. আব্দুল মতিন ও স্থানীয় ইউপি সদস্য সোলেমান আলী আহত শাকিলকে উদ্ধার করে চাটমোহর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে ভর্তি করেন।
Read More News
হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক ডা. সবিজুর রহমান জানান, আহত স্কুলছাত্রকে আমরা চিকিৎসা দিচ্ছি। আশা করি ২/৪ দিনের মধ্যে সে পুরোপুরি সুস্থ হয়ে উঠবে। আঘাতের পাশাপাশি ভয়ে সে সংজ্ঞা হারিয়ে ফেলে। শাকিলের মা সাজেদা খাতুন বলেন, ”আমার ছেলে এমন কি অপরাধ করলো যে তাকে এমনভাবে পশুর মতো মারপিট করবে।
আমি ওই শিক্ষক ও দপ্তরির বিচার চাই।” রবিবার ইউএনও এবং শিক্ষা অফিসে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন বলে জানান তিনি। বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি মো. আব্দুল মতিন জানান, আমি যতদূর শুনেছি, শাকিল ক্রিকেট খেলার সময় শিশু শ্রেণির ছাত্রী সাদিয়া বল ধরে। শাকিল তার কাছে বল চাইতে গেলে সে বল দিতে অস্বীকার করে। বল না পেয়ে শাকিল তখন সাদিয়াকে ব্যাট দিয়ে আঘাত করে। এ ধরনের একটি সামান্য বিষয় নিয়ে শাকিলকে মারপিট করা হয়। প্রধান শিক্ষক ইশরাত জাহান লাকী বলেন, ৪র্থ শ্রেণির ছাত্র শাকিলের ক্লাস শুরু দুপুর ১২টায়। সে তার অন্য সহপাঠীদের নিয়ে প্রতিদিন ক্লাস শুরুর আগে সকাল ৮টা থেকে স্কুল মাঠে খেলাধুলা ও দুষ্টুমি করে। তাদের বিভিন্নভাবে বোঝানো হয়েছে নির্ধারিত সময়ের আগে স্কুলে না আসার জন্য। কিন্তু তারা কথা শোনে না। এরই এক পর্যায়ে শনিবার সকালে তার ব্যাটের আঘাতে সাদিয়া আহত হয়।
এজন্য আমি শাসন করতে শাকিলকে বেত দিয়ে কয়েকটি পিটুনি দিয়েছি। হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার মতো কিছু হয়নি। বিষয়টি নিয়ে অতিরঞ্জিত করা হচ্ছে।