অবশেষে জামিন পেলেন বলিউড তারকা সালমান খান। বিরল প্রজাতির দুটি কৃষ্ণসার হরিণ শিকারের দায়ে গতকাল পাঁচ বছরের সাজা ঘোষণা করে সালমানকে কারাগারে পাঠান যোধপুর আদালত। গতকালই সালমানের জামিন আবেদন করেন তাঁর আইনজীবীরা। শুনানি শেষে গতকাল আদালত মুলতুবি ঘোষণা করলে, আরো একদিন কারাগারে থাকতে হয় সালমানকে। অবশেষে আজ যোধপুর আদালতের রায়ে জামিন পেলেন সালমান।
৫০ হাজার রুপি মুচলেকার বিনিময়ে জামিন পেয়েছেন সালমান। তবে কারাগার থেকে মুক্তি পেতে সালমানকে অপেক্ষা করতে হবে আজ রাত ৮ পর্যন্ত। কারণ জামিনের আনুষ্ঠানিক কাগজপত্র গোছাতে এই সময়টুকু ব্যয় হবে। ভারতের সেশন আদালতের বিচারক রবীন্দ্র কুমার জোশি এ রায় দেন।
Read More News
তবে জামিনেও রয়ে গেল রাজনীতির সূক্ষ্ম ছোঁয়া? বেশ কিছু সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমের দাবি এমনটাই।
২০১৪ সালের ১৪ জানুয়ারি তখনও নরেন্দ্র মোদি গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী, সেদিন গুজরাটে গিয়েই ঘুড়ি উড়িয়েছিলেন সালমান। গুজরাট দাঙ্গায় অভিযুক্ত মোদি। তারই সাথে একই সূতায় হাত রেখে ঘুড়ি উড়ানোর পরেই সমালোচিত হয়েছিলেন। রাজনৈতিক সূত্রের খবর, সালমানের সাথে প্রধানমন্ত্রীর সম্পর্কও বেশ ভালো।
মোদি-ঘনিষ্ঠ হওয়ার কারণেই কংগ্রেসের পক্ষ থেকে নাকি বিপাকে ফেলার চেষ্টা করা হয়েছিল সালমানকে। ২০১৫ সালে ৬ মুম্বাইয়ের দায়রা আদালত পাঁচ বছরের জন্য দোষী সাব্যস্ত করে ‘হিট অ্যান্ড রান’ কেসে। দু’দিন পরেই অবশ্য মুম্বাইয়ের হাইকোর্ট দায়রা আদালতের সেই রায় বাতিল করে দেয়।
রাজনৈতিক মহলের ধারণা, পূর্বতন কংগ্রেস সরকারই ভাইজানকে বিপাকে ফেলতে চেষ্টা কম করেনি। কারণ, ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০৪-এ ধারায় ‘অনিচ্ছাকৃত খুনের মামলা’ করে তৎকালীন ইউপিএ সরকার।
এবারে, শাসকদলের ঘনিষ্ঠ হওয়ার সুবাদেই নাকি মাত্র ৪৮ ঘণ্টার জেলবাসী হয়ে জামিনে মুক্তি। তাছাড়া নিম্ন আদালতে এবারে জেলযাত্রার কারণও নাকি ছিল রাজস্থানের স্থানীয় বিষ্ণোই সম্প্রদায়ের ক্ষোভকে প্রশমিত করার প্রয়াস। যোধপুর আদালতের বিচারপতি দেব কুমার ক্ষাত্রীরও আচমকা ট্রান্সফারে অন্য কিছুর গন্ধ পেয়েছেন অনেকে।
১৯৯৮ সালের ১ ও ২ অক্টোবর যোধপুরে ‘হাম সাথ সাথ হ্যায়’ সিনেমার শুটিংয়ের মাঝে দুটি আলাদা জায়গায় দুটি কৃষ্ণসার হরিণ হত্যা করেছিলেন সালমান। রাজস্থানের কঙ্কানি এলাকায় গ্রামবাসী জানান, গুলির শব্দ শুনে তাঁরা সালমানের জিপসি গাড়িটিকে ধাওয়া করেছিলেন। সেই সময় মামলার অন্যান্য অভিযুক্ত সাইফ আলী খান, টাবু, নিলম ও সোনালি বেন্দ্রে গাড়িতেই ছিলেন। আর গাড়িটির চালকের আসনে ছিলেন সালমান। প্রবল গতিতে গাড়ি ছুটিয়ে পালিয়ে যান তাঁরা।