পরীমণি কেন আলোচনায়

ফিল্মে নাম লেখানোর আগেই বেশ কয়েকবার আলোচনায় এসে জানান দিয়েছেন ক্যারিয়ারের দৌড় কোথায় গিয়ে পৌঁছবে। মোদ্দাকথা, ছবি মুক্তির আগেই আলোচনা ও সমালোচনার চাদর গায়ে জড়িয়ে দাপিয়ে বিচরণ করেছেন গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ সাইটগুলোতে। সেই ধারাবাহিকতায় একই সূতিকাগারে আবদ্ধ হয়ে আছেন এই অভিনেত্রী। যার কথা বলা হচ্ছে তিনি আর কেউ নন— পরীমণি। এ পর্যন্ত প্রায় দুই ডজন ছবিতে চুক্তিবদ্ধ হয়েছেন তিনি। গত এক বছরে সাতটি ছবি মুক্তি পেয়েছে তার। গত বছরের মার্চে ‘ভালোবাসা সীমাহীন’ ছবির মধ্য দিয়ে রুপালি জগতে আবির্ভাব ঘটে পরীর। আর গত মাসে মুক্তি পায় তার ‘পুড়ে যায় মন’ ছবিটি। বেশকিছু রয়েছে মুক্তির অপেক্ষায়। আর শুটিং তো চলছেই। সম্প্রতি ভারতীয় প্রভাবশালী বাংলা দৈনিক আনন্দবাজারের একটি সাক্ষাৎকারকে ঘিরে ফের আলোচনায় আসেন পরী। কেউ কেউ আবার বলছেন এগুলো নাকি এক ধরনের স্ট্যান্টবাজি। শিরোনাম হওয়ার লোভে তিনি নাকি স্বেচ্ছায় এ ধরনের তর্ক-বিতর্কে জড়াচ্ছেন।
Read More News

ওই যে বললাম, সূতিকাগারে আবদ্ধ হয়ে আছে তার সমালোচনার ক্ষেত্র। জানতে হলে তাকাতে হবে একটু পেছনে, যেতে হবে শুরুর দিকে। মূলত ‘রানা প্লাজা’ ছবির মাধ্যমে গণমাধ্যমে পাকাপোক্তভাবে জায়গা করে নেন পরীমণি। যদিও আদালতের নিষেধাজ্ঞায় বড় পর্দায় উঠতে পারেনি ছবিটি। এছাড়া এই ছবিতে অভিনয় করতে গিয়ে সেটের দোতলা থেকে পড়ে আলোচনায় আসেন তিনি। স্বল্প সময়ের এ ক্যারিয়ারে বাপ্পি, সাইমন, শাহরিয়াজ, ঁঁজায়েদ খান থেকে শুরু করে শাকিব খানের বিপরীতেও সমানতালে অভিনয় করে চলেছেন পরী। ঠিক তেমনি অভিনয়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে তাকে ঘিরে সৃষ্টি হয়েছে নানা তর্ক-বিতর্ক। ঢালিউড সেনসেশন শাকিব খানের সঙ্গে একটি অন্তরঙ্গ দৃশ্যের ভিডিও ফুটেজ প্রকাশিত হওয়ার পর হইচই ফেলে দিয়েছিলেন। সফিক হাসানের ‘ধূমকেতু’ ছবিতে শাকিব-পরীর চুমুর এই দৃশ্যটি ভাইরালে পরিণত হয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। এই একই অভিনেতার সঙ্গে রাগ করে সেট থেকে ঢাকায় ফিরে শিরোনাম হন পরী। এসএ হক অলিকের ‘আরো ভালোবাসব তোমায়’ ছবির শুটিং হচ্ছিল সিলেটের কয়েকটি লোকেশনে। একটি দৃশ্যের টেক নিয়ে কিছুটা ভুল বোঝাবুঝির সৃষ্টি হয় শাকিব-পরীর মধ্যে। ইউনিটের সবাইকে না জানিয়ে পরী রাতেই ঢাকায় ফেরেন।  সবচেয়ে বড় যে ঘটনার জন্ম হয় পরীকে ঘিরে সেটা হলো তার বিয়ের ছবি ও কাবিননামা নিয়ে। গত মাসের প্রথমদিকে সামাজিক যোগাযোগ সাইট ও গণমাধ্যমে প্রকাশ পায় তার বিয়ের খবরটি। কিন্তু এসব খবরকে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে অস্বীকার করেন তিনি। উল্টো চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেন প্রমাণ নিয়ে তার সামনে হাজির হতে। এমনকি এটাও হুমকি দেন, যারা অপপ্রচার চালাচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে মামলা করবেন। এই রেশ কাটতে না কাটতেই ভালোবাসা দিবসের প্রথম প্রহরে আরও একটি বোমা ফাটান পরী। ঘোষণা দেন নিজের বাগদানের। যদিও পাত্রের ছবি এখনো প্রকাশ করা হয়নি। কেউ কেউ আবার এটাও বলছেন বিয়ের খবরকে ধামাচাপা দিতেই হুট করে বাগদান সেরেছেন তিনি। এক কথায় বলতে গেলে ক্যারিয়ারের শুরু থেকে সবসময়ই নিজেকে আলোচনা সমালোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে পাচ্ছেন এই অভিনেত্রী। হোক সেটা সত্য কিংবা মিথ্যা অথবা গুঞ্জন।    এরকম আরও অনেক তর্ক-বিতর্কে জড়িয়েছেন পরী। কিন্তু সমালোচনার কফিনে সর্বশেষ পেরেক ঠুকেছে কলকাতার আনন্দবাজার পত্রিকা। সমালোচনা-আলোচনার প্রসঙ্গ নিয়ে জানতে চাইলে  পরীমণি বলেন, ‘আমার জন্য এ বিষয়গুলো শাপে বর হয়েছে। অর্থাৎ মন্দের ভালো। বলতে পারেন ফ্রিতে পাবলিসিটি পেয়ে যাচ্ছি।’ এগুলো কি এক ধরনের স্ট্যান্টবাজি— এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘আপনাদের এই একই অভিযোগ শুনতে শুনতে আমি কাহিল। বর্তমান প্রেক্ষাপটে স্ট্যান্টবাজি সাজে না। কেউ কি নিজে নিজে এ ধরনের বিতর্ক তৈরি করবে। যদি সব পজিটিভ সমালোচনা থাকত তাহলে না হয় একটা কথা ছিল। এখন তো দেখা যাচ্ছে, বেশিরভাগই আমার বিরুদ্ধে প্রচারণা। কিছু নিউজ আবার মনগড়া। আরে ভাই কাজ করতে গেলে কিছু নিউজ এমনিতেই অনেকের খোরাক হয়ে যায়। তার মানে এই নয় স্ট্যান্টবাজি করে নিজের পায়ে কুড়াল মারব।’   এদিকে চলচ্চিত্র বোদ্ধারা মনে করছেন সমালোচনা-আলোচনা যাই হোক না কেন এতে করে ফিল্মপাড়ার ভালোই হচ্ছে। নায়িকা সংকটের এ সময়ে অন্তত কেউ তো আলোচনায় আছেন। তাছাড়া মিডিয়ায় আলোচনা-সমালোচনা থাকবেই।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *