গ্যাস সংকটে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা

কয়েকদিন ধরে রাজধানী ঢাকা ও বন্দরনগরী চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন এলাকায় গ্যাস সংকট দেখা দিয়েছে। গ্যাসের অভাবে কারখানার উৎপাদন ব্যাহত হওয়ার পাশাপাশি গৃহিণীরা রান্না করতে চরম সমস্যায় পড়ছেন। আর সময়মতো রান্না না হওয়ায় স্কুল ও অফিস যেতেও সমস্যায় হচ্ছে বলে জানা গেছে। দেড় মাস ধরে গ্যাস কম আসছিল রাজধানীর মগবাজার এলাকার এক গৃহিণীর বাড়িতে; গতকাল রবিবার সকালে চুলা ধরাতে গিয়ে দেখেন, গ্যাস একেবারেই নেই।
‘আগে কম গ্যাসে কোনোরকম রান্না করা গেলেও তাও বন্ধ হয়ে গেলো। রান্না না হওয়ায় দুপুরে খাবার কিনতে হয়েছে তাকে। এরপর বিকাল ৪টার দিকে আবার গ্যাস আসতে থাকে বলে জানান এই গৃহিণী, যদিও আগের মতোই চাপ কম।’ মগবাজার ছাড়াও নিউ ইস্কাটনের আরো কয়েকজন বাসিন্দা বলেছেন, মাসখানেক ধরে গৃহস্থালিতে গ্যাসের চাপ কম পাচ্ছেন তারা। একই অভিজ্ঞতার কথা জানান দুই কিলোমিটার দূরের তেজগাঁও দক্ষিণ বেগুনবাড়ির বাসিন্দারা। তারা বলেন, ‘গত দুই মাস ধরে সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৩টা পর্যন্ত গ্যাসের সংকট চলছে। এই সময়ের মধ্যে লাইনে যে গ্যাস আসে, তাতে রান্নাবান্না সম্ভব হয় না। খাবার কিনে খেতে হচ্ছে।’ মিরপুরের আগারগাঁওয়ের শাপলা হাউজিংয়ের বাসিন্দা মাহিনুর বেগম জানান, তারা গত দেড় মাস ধরে দিনে ২-৩ ঘণ্টার জন্য গ্যাস পেতেন। গত দুদিন ধরে একদমই পাচ্ছেন না। আগারগাঁও ও শ্যামলী এলাকার বাসিন্দারা বলেন, তারা এখন ইলেকট্রিক চুলায় রান্নাবান্না করছেন। ডিসেম্বর থেকে এলাকায় গ্যাস সংকট। গত এক সপ্তাহ ধরে ২৪ ঘণ্টা গ্যাস আসা বন্ধ। একই সংকট চলছে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায়ও।
Read More News

একই রকম সমস্যার কথা যেমন এসেছে রাজধানীর দক্ষিণ প্রান্তের পুরান ঢাকার লালবাগ থেকে, তেমনি এসেছে উত্তর প্রান্তের উত্তরা এবং পূর্ব প্রান্তের বাড্ডার বাসিন্দাদের কাছ থেকে। এসব এলাকার অনেক বাসিন্দা বলেছেন, বাড়িতে রান্না করতে না পেরে বাইরে থেকে খাবার কিনতে গিয়ে ব্যয় বেড়ে যাচ্ছে। আবার বৈদ্যুতিক চুলায় রান্না করতে গেলেও খরচ বাড়ছে। গ্রাহকদের শত শত অভিযোগ পাওয়ার কথা স্বীকার করেছেন মিরপুর-১২ নম্বর সেকশনের তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির অভিযোগ কেন্দ্রের টেকনিশিয়ান বাচ্চু মিয়া। ‘গ্যাসের চাপ কম তো, তাই সরবরাহ কম,’ বলেই তিনি অচিরেই সমস্যা সমাধানের আশা দেখান।
তিতাসের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘বর্তমানে দৈনিক প্রায় দুই হাজার মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাসের চাহিদা থাকলেও তিতাস পাচ্ছে প্রায় ১৭০০ মিলিয়ন ঘনফুট। ৩০০ মিলিয়ন গ্যাসের ঘাটতি থেকেই যাচ্ছে।’
তবে তিতাসের আরেক কর্মকর্তা সমস্যার জন্য শীতের এই সময়ে চাহিদা বেড়ে যাওয়াকেই দায়ী করেছেন। শীতের সময় আবাসিক গ্রাহকদের চাহিদা অন্যান্য সময়ের চেয়ে একটু বেশি থাকে। তাই এই সময়টায় একটু সমস্যা হয়,’ বলেন তিনি। এছাড়া কিছু ছোটখাটো কারিগরি সমস্যার কথা স্বীকার করে তিনি বলেন, এগুলো রাতের মধ্যে ঠিক হয়ে যাবে বলে আশা করছি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *